Wednesday, March 4, 2015

ভ্রমণ

তোমার মধ্যে আমি পেয়েছি আমার গন্তব্য
এখন আর আমার কোন তাড়া নেই ।
আমার মন তোমার আকাশে
এখন ঐ ধ্রুব তারাটির মত স্থির ।
আমার ভালবাসার সাম্পান
সাত সমুদ্র পেরিয়ে, অষ্টম সমুদ্রের টানে
রবীন্দ্রনাথের গানের মত ধীর শান্ত লয়ে
এখন এগিয়ে চলেছে অনন্তের পথে ।
তার মধ্যে আর তীর দখলের তাড়া নেই ,
আর তার ভয় নেই কিছু হারাবার ।
এইতো শুরু হল আমার যথার্থ ভ্রমণ ।
এ পথ যত দীর্ঘ হয় , আমি খুশী ।

Saturday, February 28, 2015

ভালবাসার ছোট গল্প

ছেলেটি খুব অবাক হয়ে মোবাইলের দিকে তাকালো। প্রায় ৬ মাস পর সেই নাম্বার থেকে কল। মোবাইলের স্ক্রীনে খুব সুন্দর করে লেখা- SHE calling...
৬ মাস আগে তার সাথে মেয়েটির ব্রেকআপ হয়ে যায়। সব ঠিকঠাক, হঠাৎ একদিন মেয়েটি জানালো, "আমি রিলেশনটা কনটিনিউ করতে পারবো না। আমি সিরিয়াস।"
ছেলে: আধো বিশ্বাস আধো অবিশ্বাসে দুলতে দুলতে বললো, "কেনো? কী হইছে?"
মেয়ে :খুব নির্লিপ্ত ভঙ্গিতে উত্তর দিলো, "আমার আরো একটা রিলেশন আছে। আমি সেটাই কনটিনিউ করতে চাই।"
বিশ্বাস করতে পারছিলো না সে । বললো, "আরে ধুর, ফাইজলামি করো ক্যান!"
ফোন কেটে দেয় । এরপর অনেক চেষ্টা করেও আর যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি তার সাথে। সপ্তাহ দুয়েক পর খবর পেয়েছিলো, মেয়েটি ফ্যামিলির সাথে কানাডা চলে গিয়েছে।
এ পর্যন্তই তার নামটা ছেলেটির প্রতি রাতের চোখের জলে আর ফোনবুকের 'SHE' নামের আড়ালেই রয়ে গেলো।
এমন অদ্ভুত অপ্রত্যাশিত ব্রেক আপের পর আজ আবার তার কল।ছেলেটি বুঝে উঠতে পারে না কী করবে। শেষমেষ কলটা রিসিভ করলো।
যতটা না অভিমান কিংবা কষ্ট, তার চেয়েও বেশি কৌতুহল ভরা কন্ঠে বললো,
হ্যালো?
কেমন আছো?
তার কন্ঠটা আগের মত আর বাচ্চা বাচ্চা নেই। নারীত্বের ছাপ স্পষ্ট।
বেঁচে আছি। কানাডা থেকে ফিরেছো কবে?
গতকাল। আমি খুব সরি...
বাদ দাও। তারপর কেমন আছো? খুব সুখেই আছো নিশ্চয়?
আমি রিয়েলি অনেক সরি। প্লিজ..
বিএফ কেমন আছে?
প্লিজ... আমাকে মাফ করে দাও...
বিয়ে করে ফেলেছো? বাচ্চা কাচ্চা?
স্টপ! স্টপ ইট!
ওপাশ থেকে চিৎকার করে ওঠে সে । সেই সাথে শোনা গেলো কান্নার আওয়াজ...
প্রতিহিংসা কমিয়ে ছেলেটি শান্তভাবে বললো,
"এমন করলা কেন আমার সাথে?"
কাঁদতে কাঁদতে সে অনেক কথা বললো। কথাগুলোর সারমর্ম করলে যা দাড়ায়, তা হচ্ছে- অন্য কোনো ছেলের সাথে মেয়েটির রিলেশন ছিলো না। তার বাবা একপ্রকার জোর করেই সবাইকে নিয়ে কানাডা যাবার ব্যবস্থা করে ফেলেন। আর ফেরা হবে না, ওখানেই স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু হবে, এমনটাই পরিকল্পনা ছিলো। তাই সে সম্পর্কটার আর কোনো ভবিষ্যত নেই এটা বুঝতে পেরেছিলো বলেই ঐ নির্মম নাটকটা করতে হয় তাকে।
সব শুনে ছেলেটি বললো, "দেশে ফিরেছো কেন তাহলে?"
বাবা মারা গেছে...
অভিমানী প্রেমিকের সব দম্ভ নিমেষেই চুরমার হয়ে গেল। শুধু বললো, "তুমি কোথায় এখন? দেখা করো প্লিজ... এই মুহুর্তে..."
রেস্টুরেন্টে টেবিলের ওপাশে বসা মেয়েটা বড্ড অচেনা লাগছে। ঠোট থেকে মুছে গেছে সব স্পর্শের ছাপ। সাবেক প্রেমিকার দিকে তাকিয়ে বললো,
তারপর এখন ফিউচার প্লান কী?
জানি না।
বিয়ে শাদী করে ফেলো একটা।
হুম।
তুমি আমাকে নিয়ে আবার কোনো স্বপ্ন দেখছো না তো? মেয়েটি খুব অসহায়ের মত তার দিকে তাকালো। সে বুঝতে পেরে বললো,
কি অদ্ভুত। আমার কোনো লাইফ নেই? তুমি কি ভেবেছো সারাজীবন ওয়েট করবো তোমার জন্য?
মেয়ে :ওও। আমি সরি।
উঠে দাড়ালো । চোখে জল টলমল করছে। ঘুরে দরজার দিকে পা বাড়ালো। মেয়েরা এভাবেই কান্না লুকোয়। যার জন্য কান্না, তাকে দেখায় না, কিন্তু পৃথিবীবাসীকে দেখায়। চোখের জলের কি মায়াবী অপচয়!
পেছন থেকে হাতটা টেনে ধরলো ছেলেটি। হাসিমুখে বললো, "এই রেস্টুরেন্টের রাইসে লবন অনেক কম। দেখি, কয়েক ফোটা চোখের পানি দিয়ে যাও। চোখের পানি লবনাক্ত।"
মেয়েটা কেঁদে ফেললো । ছেলে :"এত কাঁদো ক্যান? অবশ্য ভালোই হইছে। আমাদের সংসারে লবন কিনতে হবে না। তোমার চোখের পানিতেই রান্না হয়ে যাবে। ইউ নো, চোখের পানি লবনাক্ত!"
তার কান্নার বেগ আরো বেড়ে গেল।
সত্যিকারের ভালোবাসা হলে সে ফিরে আসবেই.

মিথ্যাকাব্য

এইতো সেদিন;
হ্যাঁ, এই সেদিনই'তো তুই ছিলি!
যাকে ভালোবাসা যেতো,ছুঁয়ে দেওয়া যেতো।
ভেবে ভেবে পার করা যেত বিনিদ্র প্রহর।
আমাদের নিজস্ব একটা জগত ছিল,
সোনালী আলোয় মোড়ানো ছিল সে জগত।
সেখানে শুধু আমি ছিলাম,আর ছিলি তুই।
আমি তোকে ঘিরে আবর্তিত হতাম,তুই আমাকে ঘিরে।
খুনসুঁটির মায়াতে আমরা বাধা ছিলাম সবুজ সুতোয়,
নীলাভ আভায়।
আমরা বেশ ছিলাম,তাইনা?
কিন্তু দেখ;
মাত্র কয়েকটা দিনের ব্যবধানে
কেমন ওলটপালট তুই,
ওলটপালট আমি!
ভাবলেই কেমন দমবন্ধ, দমবন্ধ লাগে!
একটা ঝড়,দুইটা ঝড়,
হাজার হাজার কোটি কোটি ঝড়,
বিচ্ছিন্নভাবে আমার বুকের মধ্যে দামামা বাজায়।
মাঝরাতে আমি ঘুম থেকে লাফিয়ে জেগে উঠি,
দুঃস্বপ্নের প্রবল কড়াঘাতে কাঁচা ঘুমটাও ভেঙে যায়।
আমার তখন চুউউউউপ করে ঘাপটি মেরে
বসে থাকতে ইচ্ছে করে লাশকাটা ঘরের বারান্দায়।
তোর দেওয়া ফুল শুকিয়ে গেছে ,
চিঠির পাতা মলিন হয়েছে।
তবু দেখ,
ফুলের-চিঠির ঘ্রাণটা কিন্তু ঠিক সেই আগের মতই
মাতাল মাতাল সুবাস ছড়ায়!
জানিস?
আমার গিটারের ছেঁড়া তার, ময়লা টিশার্ট, বখে যাওয়া কবিতা-
সব আছে, সব!
শুধু তুই নেই,আমি তোকে পাইনা।
হাতের রেখায় আতশ কাঁচ ডুবিয়ে আমি তোকে খুঁজি,
কিন্তু আমি তোকে পাইনা।
কেন পাইনা?
আমার জানতে ইচ্ছে হয়,জানা হয়না।
হঠাত মাঝে মাঝে আমার সন্দেহ জাগে;
আচ্ছা, তুই কি সত্যি ছিলি?
ভাবতে ভাবতে মাথাটা কেমন ভারী হয়ে যাচ্ছে।
কি করি আমি?কি করি,বলতো?
যাশ্শালা, আজ থেকে ভাববো-
তুই কোথাও কখ্খনো ছিলি'ইনা...!

Friday, February 27, 2015

যদি ভালবাসা পাই

যদি ভালবাসা পাই আবার শুধরে নেব
জীবনের ভুলগুলি
যদি ভালবাসা পাই ব্যাপক দীর্ঘপথে
তুলে নেব ঝোলাঝুলি
যদি ভালবাসা পাই শীতের রাতের শেষে
মখমল দিন পাব
যদি ভালবাসা পাই পাহাড় ডিঙ্গাবো
আর সমুদ্র সাঁতরাবো
যদি ভালবাসা পাই আমার আকাশ হবে
দ্রুত শরতের নীল
যদি ভালবাসা পাই জীবনে আমিও পাব
মধ্য অন্তমিল।

কোথায় চলছে পৃথিবী

তোমারও নেই ঘর
আছে ঘরের দিকে যাওয়া।
সমস্ত সংসার
হাওয়া
উঠছে নীল ধূলোয় সবুজ অদ্ভূত;
দিনের অগ্নিদূত
আবার কালো চক্ষে বর্ষার নামে ধার।
কৈলাস মানস সরোবর
অচেনা কলকাতা শহর—
হাঁটি ধারে ধারে
ফিরি মাটিতে মিলিয়ে
গাছ বীজ হাড় স্বপ্ন আশ্চর্য জানা
এবং তোমার আঙ্কিক অমোঘ অবেদন
আবর্তন
নিয়ে
কোথায় চলছে পৃথিবী।
আমারও নেই ঘর
আছে ঘরের দিকে যাওয়া।।

সেদিন আকাশ মেঘলা ছিল

আচ্ছা, বলতো--
সেদিন কি আকাশ খুব মেঘলা ছিল ?
আঁধার ঘন- কালো হয়ে আসা- সময়ে
ছিল বুঝি খুব ঘরে ফেরার তাড়া ?
ভরা নদীর বুকের উথাল- পাথাল
তোলপাড় খাওয়া ঢেউ আছড়ে পড়েছিলো;
আমারও বুকে।
ঠিক অমনই আলোড়ন তুলে।
বাতাসে উড়ছিল এলোমেলো হয়ে যাওয়া চুল
শুকনো পাতা, ছেঁড়া কাগজ-- পলিথিন
আরও কত কি !
শান্ত পৃথিবী সহসা কেমন অস্থির, চঞ্চল
হয়ে উঠেছিলো
ঠিক আমারই মত--
বাতাসে ছিল বুনো ফুলের সুবাস,
একটু অন্য রকম,
ঠিক যেন মাতাল হাওয়া।
সেই অন্যরকম গন্ধের সুরভি
বুকে মেখে,
কেমন জানি
অন্যরকম হয়েছিলাম আমিও।।

তুমি ডাক দিলে

একবার ডাক দিয়ে দেখো
আমি কতোটা কাঙাল,
কতো হুলুস্থূল অনটন আজন্ম ভেতরে আমার।
তুমি ডাক দিলে নষ্ট কষ্ট সব নিমিষেই ঝেড়ে মুছে
শব্দের অধিক দ্রুত গতিতে পৌছুবো।
পরিণত প্রণয়ের উৎসমূল ছোঁব
পথে এতোটুকু দেরিও করবো না।
তুমি ডাক দিলে
সীমাহীন খাঁ খাঁ নিয়ে মরোদ্যান হবো,
তুমি রাজি হলে
যুগল আহলাদে এক মনোরম আশ্রম বানাবো।
একবার আমন্রণ পেলে
সব কিছু ফেলে
তোমার উদ্দেশ্যে দেবো উজাড় উড়াল,
অভয়ারণ্য হবে কথা দিলে
লোকালয়ে থাকবো না আর
আমরণ পাখি হয়ে যাবো-
খাবো মৌনতা তোমার।